সামনেই বিয়ে ? চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সমস্থ গুরুত্বপূর্ণ
কাজগুলির পাশাপাশি মনে রাখতে হবে যে মানুষটির সঙ্গে সারাজীবন কাটাবেন তার মনের পাশাপাশি
তার শারীরিক বিষয়গুলোও জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে আাগামী জীবন সমস্যায় পরতে
হতে পারে। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিয়ের আগে অবশ্যই কিছু মেডিকেল পরীক্ষা করানো
উচিত উভয়েরই।
রক্ত পরীক্ষা
রক্তবাহিত নানারকম
রোগ হয়।
যেমন- হিমোফিলিয়া,
থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি।
যার প্রভাব
পরতে পারে
আপনাদের ভবিষ্যত
প্রজন্মের উপর।
যেমন থ্যালাসেমিয়া
আক্রান্ত কারোর
সঙ্গে স্বাভাবিক
কারোর বিয়ে
হলে সন্তানের
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত
হওয়ার ২৫
শতাংশ সম্ভাবনা
থাকে। হবু
স্বামী স্ত্রীয়ের
মধ্যে একজন
যদি থ্যালাসেমিয়ার
বাহক হয়,
তবে সমস্যা
হয়না, কিন্তু
দু’জনেই
এই রোগের
বাহক হলে
সেক্ষেত্রেও সন্তানের
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত
হওয়ার ২৫
শতাংশ সম্ভাবনা
থাকে। আর
দুজনেই যদি
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত
হয়, তবে
চিকিৎসকেরা সন্তান
না নেওয়ার
পরামর্শ দিয়ে
থাকেন।
জেনেটিক পরীক্ষা
জেনেটিক ডিসঅর্ডার কিন্তু এক প্রজন্ম
থেকে অন্য প্রজন্মে বাহিত
হয়। তাই
বিয়ের আগে জেনেটিক টেস্ট
করা খুবই জরুরী।
আপনার বা আপনার পার্টনারের
যদি সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ব্রেস্ট ক্যান্সার, লাং ক্যান্সার, কোলন
ক্যান্সার থেকে থাকে, তাহলে
সন্তানেরও তা হওয়ার সম্ভাবনা
তৈরি হয়। এমনকি
আপনাদের পরিবারের কারুর এই রোগ
থেকে থাকলেও তা পরবর্তী
প্রজন্মে বাহিত হতে পারে। তাই
বিয়ের আগে দুই পরিবারেরই
মেডিক্যাল হিস্ট্রি জেনে নেওয়া অত্যন্ত
জরুরী।
যৌনরোগ বা এসটিডি পরীক্ষা
বিয়ের আগে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে
শারীরিক সম্পর্ক থাকলে এইচআইভি, গনোরিয়া, ওয়ার্টস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস, সিফিলিসের
মতো যৌনরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বিয়ের আগে এই পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
এই রোগগুলি সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ (এসটিডি) নামে পরিচিত। গনোরিয়া, সিফিলিস,
ওয়ার্টস, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস যদি ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হলে সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা
থাকে। কিন্তু HIV-র ক্ষেত্রে সেটা হয় না। এমনকি যদি কোনো একজনের এই রোগ থাকে, তাহলে
সেক্সের মাধ্যমে আরেকজনের শরীরেও চলে যেতে পারে, এবং সন্তান হলে সেক্ষেত্রেও এই রোগ
তার মধ্যে বাহিত হয়।
আরও পড়ুন - মেয়েদের যে ভুলগুলোর কারণে হচ্ছে স্তন ক্যান্সার
বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা বা ইনফার্টিলিটি সঙ্ক্রান্ত পরীক্ষা
যতই চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক হোক
না কেন, স্বীকার করতেই
হবে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা কিন্তু বেড়েই
চলেছে। আর
আমাদের দেশে জানেনই, এখনও
সন্তান আসতে কোনো সমস্যা
হলে দোষ দেওয়া হয়
মেয়েটিকেই। বিবাহিত
জীবনের ক্ষেত্রে সন্তান কিন্তু খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। তাই
বিয়ের আগে দুজনই করান
ফার্টিলিটি টেস্ট। বিয়ের
আগে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে পাত্রীর
পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া
উচিত ইউটেরাস ও ওভারিতে কোনো
সমস্যা আছে কিনা।
সেইসঙ্গে পাত্রের বীর্যপাতজনিত
কোনো সমস্যা আছে কিনা
তা আগেই টেস্ট করে
জেনে নেওয়া উচিত।
পুরুষের ফার্টিলিটি চেক করার জন্য
সিমেন টেস্ট আর মেয়েদের
জন্য ওভিউলেশন টেস্ট করানো হয়। আর
আপনার জননতন্ত্রে কোনো জেনেটিক অ্যাবনর্মালিটি
আছে কিনা তা দেখার
জন্য পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা
করানো দরকার। তাছাড়া
প্রোল্যাক্টিন, FSH, LH, টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের পরীক্ষা করতে ভুলবেন না।
মানসিক রোগ
মানসিক রোগকে আমরা সবাই
অবজ্ঞা করি। আমাদের
দিদিমা ঠাকুমা রা প্রায়
বলে থাকেন যে মানসিক
রোগীকে বিয়ে দিয়ে দাও,
সব ঠিক হয়ে যাবে। এটি
খুবই মারাত্মক ভাবনা। বিয়ে
করালে মানসিক রোগ ভালো
হয় না বরং বেশিরভাগ
ক্ষেত্রে দেখাগেছে যে আারও বাড়ে। বিয়ে
মানে শুধু একসাথে থাকা
নয়, অনেক দায়িত্বও কাঁধে
নেওয়া। এগুলো
সামলাতে গিয়ে রোগ আরো
বাড়ে। তাই
চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ না
করে বিয়ে করবেন না। উভয়ের
ক্ষেত্রই বলব রোগ আগে
থেকে লুকাবেন না। হবু
সঙ্গীর সাথে আগে থেকেই
আলাপ করে নিন।
দেখবেন হবু সঙ্গীর সহযোগিতায়
অনেক সমস্যা মিটে যাবে।
ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরী কিছু ফেস প্যাক
ওপরে যে রোগগুলির কথা
বললাম, সেগুলি কিন্তু আপনাদের
বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ তা
নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।
তাই আগামী বিবাহিত জীবন
সুখের করতে হলে বিয়ের
আগেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করান এই
মেডিক্যাল টেস্ট গুলি।
আর সুস্থ থাকুন।
আপনাদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
প্রয়োজনে অবশ্যই কমেন্ট করুন, দয়াকরে কোন স্প্যাম লিঙ্ক কমেন্টে দেবেন না।